Monday, September 1, 2025

কেউ বলতে পারছে না, কে দেশ চালাচ্ছে: জি এম কাদের

আরও পড়ুন

জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, ‘ভজকটভাবে দেশ চলছে। কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না, কে দেশ চালাচ্ছে? সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার আছে। সেই সরকারই নাকি দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’

শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের (একাংশ) চেয়ারম্যানসহ নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। পরে গণমাধ্যমে দলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।

সমাবেশে জি এম কাদের বলেন, সরকারি দলও নাকি অনেকগুলো দাঁড়িয়ে গেছে। কোনো নিবন্ধন নেই, এমন দলের কিছু অংশ সরকারে, আর কিছু অংশ বাইরে আছে। সরকারি দলের সব সুযোগ-সুবিধা তারা ভোগ করছে, তাদের বক্তব্য ও বিবৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে সরকার গ্রহণ করছে।

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের মতো বড় দুই দলও সরকারি দলের মতো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে বলে জি এম কাদের অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আরও ছোট ছোট কিছু দল আছে, যারা কোনো দিন নির্বাচনই করেনি অথবা নির্বাচিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব পালন করেনি, তারাও সরকারি দলের সুযোগ-সুবিধা লাভ করছে।

আরও পড়ুনঃ  গ্রেফতারের দাবিতে ফজলুর রহমানের বাসার সামনে বিক্ষোভ

দেশে কার্যত বিরোধী কণ্ঠস্বর নেই মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, সরকারি দলগুলোর বাইরে যেসব দল রয়েছে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিয়ে রহস্য রয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বেশির ভাগ মানুষই কি ওই কয়েকটি দলের সমর্থক? সবাই কি এই দলগুলোকেই ভোট দেবে? দেশের দুই–তৃতীয়াংশ মানুষ এই সরকারের (অন্তর্বর্তী) কর্মকাণ্ডের বিরোধী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয় পার্টি দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, এ কারণেই জাতীয় পার্টির ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন চলছে। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। সরকার জাতীয় পার্টির কণ্ঠ রোধ করতে চাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারও বিরোধী কণ্ঠস্বর সহ্য করতে পারে না। আপনারা তো শেখ হাসিনার মতোই একই কাজ করছেন। ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছেন। বর্তমান সরকার হচ্ছে নব্য ফ্যাসিবাদ।’

আরও পড়ুনঃ  ইসলামি দলগুলো নিয়ে জোট গঠনে সফল হবে জামায়াত?

নির্বাচন হওয়ার পরিবেশ দেখতে পাচ্ছেন না জানিয়ে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন চেয়েছিলাম, যা দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছিল না। সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের আশায় আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলাম।…বেশির ভাগ মানুষ আন্দোলনে নেমেছে, জীবন দিয়েছে একটি সুন্দর নির্বাচনের জন্য। যার মাধ্যমে ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠন হবে, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।…আমরা দেখছি, দেশে অন্যায় ও অবিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

এই সরকারের নির্বাচন করার সক্ষমতা নেই বলে মনে করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ, এই সরকার প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ সব বিভাগের মনোবল ভেঙে দিয়েছে। অনেককেই মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। যে পদগুলো খালি হচ্ছে, সেখানে নিজস্ব লোকজন নিয়োগ দিয়ে দলীয়করণ করছে। অবাধ নির্বাচন করতে চাইলে সবাইকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  বিজিবির পা ধরে বিএসএফের ক্ষমা প্রার্থনা, ভিডিও অপসারণ করল ভারত

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি একাংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর, সাইফুদ্দিন আহমেদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার, এমরান হোসেন মিয়া, এইচ এম শাহরিয়ার, মহসিনুল ইসলাম, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান, মেহেরুন্নেসা খান, মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ প্রমুখ।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদদীন প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ